নৈতিকতা নীতিনিষ্ঠার সম্পুরক উচ্চারণ। মানবজীবনের পরিশুদ্ধ গুণাবলির সমন্বয়ে গড়ে ওঠে ব্যক্তি মানুষের নীতিবোধ। যা প্রাত্যহিক জীবনচর্চায় প্রতিফলিত হয়। যা আর্থ-সামাজিক প্রতিবন্ধকতায় শাণিত হয়ে ওঠে। আর প্রযত্ন প্রয়াসে তাকে সজীব ও সক্রিয় রাখতে হয়।
সমাজজীবনে ব্যাক্তি লাভ ও লোভের প্রলোভনে পতিত হতে পারে। নীতি বহির্ভূত কর্মকান্ডে জড়িয়ে যেতে পারে। অসত্য, অশিষ্ট বা অন্যয় দ্বারা প্রলুব্ধ হতে পারে। তাই ব্যক্তি মানুষকে প্রতিনিয়ত অনুশীলন ও মানসিক দৃঢ়তা নিয়ে ন্যয়নিষ্ঠা ও বিশুদ্ধ থাকতে হয়। তাকে নীতিনিষ্ঠা থাকতে সচেষ্ট হতে হয়। প্রতিপলের বিচ্যুতি ও বিভ্রান্তি মুক্ত হতে হয়। অবিরাম সাধনায় তার নিবৃত্তি ও সংযম উৎকৃষ্ট হয়। বিরতিহীন প্রচেষ্টায় সিদ্ধি ও সমৃদ্ধি ঘটে। বস্তুত নীতিঋদ্ধি মানুষের সর্বোত্তম সম্পদ। একে প্রতিদিনের পরিচর্যায় বাঁচিয়ে রাখতে হয়। যে মানুষ সে কাজটি করতে পারেন তিনি দেশ ও জাতির অমূল্য ঐশ্বর্য।
সমকালীন পরিপ্রেক্ষিতে একথা অসত্য নয় যে, সভ্যতার ভৌত বিকাশ অভৌত উত্তরণকে সর্বত্র যথার্থ করে তুলতে পারেনি। বিচ্যুতি ও অসংগতি থেকেই গেছে। যে কারণে সভ্যতার অভৌত উত্তরণ যা মানুষের মন ও মননের, প্রাত্যহিক আচরণ ও উচ্চারণে প্রমূর্ত হয়ে ঐসব ক্ষতকে সুস্পষ্ট করে তোলে। আজ তাই প্রত্যক্ষ হয়ে উঠেছে সেসব মানবিক বিচ্যুতি ও বিভ্রান্তি। যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সংক্রমণের আশংকা প্রবল।
তাই সভ্যতার সামগ্রিক উত্তরণের প্রয়োজনে নীতি-নৈতিকতার সুদৃঢ় অনুশীলন অপরিহার্য। মানুষকে সভ্যতার সারথি হওয়ার জন্য নীতিনিষ্ঠ হওয়া আবশ্যক। এই অনিবার্য সত্য উপলব্ধি থেকে সৃষ্টি হয়েছে এথিক্স ক্লাব। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে থেকে যাত্রা শুরু করে এথিক্স ক্লাব।
জন্মলগ্ন থেকে এথিক্স ক্লাব বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তার কর্মকান্ড পরিচালিত করতে থাকে। বিশেষত শিক্ষার্থীদের কাছে উপস্থাপন করে নৈতিকতার গুরুত্ব এবং এথিক্স ক্লাবের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ক্লাবের কর্মকান্ড। প্রতিবছরের জানুয়ারি মাসের এক তারিখ পালন করে বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে এথিক্স ডে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এথিকস্ ডে হয়ে ওঠে আত্মশুদ্ধিতে বলিয়ান হওয়ার প্রত্যয়ে শপথ নেয়ার দিন।
পহেলা জানুয়ারি এথিক্স ডে পালন করতে গিয়ে দেখা গেলো এ দিনটি বর্ষসূচনা দিবস বলে বিচিত্র আয়োজনে উদযাপিত হয়। এছাড়া বহুদেশে এদিন ছুটির দিন হিসেবে ঘোষিত হয়। সে বিবেচনায় ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পঁচিশে জানুয়ারি পালিত হয় এথিক্স ডে। এখন অনাবিল আনন্দ আয়োজনে এথিক্স ডে হয়ে ওঠে শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলের প্রাণের দিবস।